কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র
- নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আমানউল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের এক নারী নেত্রী ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। তবে বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি ও ছাত্রদল সংশ্লিষ্ট একাধিক নেতা-কর্মী।
অভিযোগকারী নারী নিজেকে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাবেক নেত্রী দাবি করলেও জানা গেছে, তিনি দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গসহ নানা অভিযোগে ইতোমধ্যে বহিষ্কৃত হয়েছেন। ওই নারী বিবাহিত, ডিভোর্সপ্রাপ্ত এবং এক সন্তানের জননী। তার ছেলেও বর্তমানে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীর বিরুদ্ধে অতীতে পুরুষদের ব্ল্যাকমেইলিংসহ একাধিক বিতর্কিত ঘটনার অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারী নারীর পারিবারিক পটভূমি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তার পিতা স্থানীয়ভাবে ‘কুদ্দুস ডাকাত’ নামে পরিচিত ছিলেন বলে জানা গেছে। ২০১৭ সালের দিকে স্বামীর সাথে দ্বন্দ্বের জেরে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমান এবং করোনার আগে দেশে ফিরে সক্রিয় হন সামাজিক মাধ্যমে। তার স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত এবং সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মহিলা দল থেকে বহিষ্কারের পর তিনি অন্য একটি রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ হয়েছেন। এই মামলার পেছনে একটি রাজনৈতিক দলের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, ওই নারীকে সহযোগিতা করতে একটি ইসলামী রাজনৈতিক দলের এমপি প্রার্থী তার বাসায় গিয়ে দেখা করেছেন এবং আইনি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। মামলার আইনজীবীও ঐ একই রাজনৈতিক মতাদর্শের বলে দাবি করা হচ্ছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ১০ অক্টোবর রাতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তবে প্রমাণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, আমানউল্লাহ আমান ৯ অক্টোবর থেকেই রাজশাহীতে ছিলেন রাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্রার্থীদের প্রচারণা কাজে। ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবির ও জিএস প্রার্থী জীবন জানিয়েছেন, “১০ অক্টোবর আমান ভাই রাজশাহীতে ছিলেন, তার উপস্থিতির সিসি ক্যামেরা ফুটেজও রয়েছে।”
এ বিষয়ে আমানউল্লাহ আমান দৃঢ় অবস্থান নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছেন, “ঘটনা সত্য হলে আমি আইন অনুযায়ী শাস্তি পেতে প্রস্তুত।” তিনি একইসাথে অভিযোগকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।
ছাত্রদলের একাধিক নেতা মনে করছেন, আসন্ন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াকে ঘিরে আমানউল্লাহ আমানকে বিতর্কিত করে দমিয়ে রাখার অপচেষ্টা চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “বাঁশেরকেল্লা” নামক একটি প্রচার সেল এ ঘটনার প্রচারে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের একাধিক নেতা বলেন,
“আমান একজন বিনয়ী, ভদ্র এবং দলের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। তিনি বারবার নির্যাতিত হয়েছেন, তবুও দমে যাননি। আজ এমন একজন নেতাকে মিথ্যা অভিযোগে কলঙ্কিত করার চেষ্টা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মতো সংগঠনকে দুর্বল করার জন্যই আমানদের মতো নেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে। কিন্তু আমানরা রাজপথে জন্ম নেওয়া নেতৃত্ব—ওদের রক্তে ও শ্রমে গড়া সংগ্রামী ঐতিহ্য সহজে ভাঙা যাবে না।”
রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে — এটি কি কেবল একটি ব্যক্তিগত মামলা, নাকি পরিকল্পিতভাবে ছাত্রদল ও বিএনপির একটি শীর্ষ নেতৃত্বকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টা? তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন ও মিথ্যা প্রচারকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ছাত্রদল নেতারা।







