সেলফির পরেই ভেলকি
আলাদিনের চেরাগের গল্প শুনেছেন? ওই যে চেরাগে ঘষা দেওয়ার সাথে সাথে বের হয়ে আসলো সব হুকুম পালন করা জিন,দুনিয়ায় এসে গেল সেই চেরাগ মালিকের হাতের মুঠোতে।
তেমনি এক চেরাগসম সেলফির উদয় হয়েছে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির আকাশে। কি না পাওয়া যায় এই সেলফির ঘষায়।আমেরিকার মতো মহাপরাক্রমশালী দেশের স্যাংশনের হুমকি কে এক ফুত্কারে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে এই সেলফি। বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের বিনা বিচারে জেলে ঢোকানোর বন্দোবস্ত করে এই সেলফি। শাপলা ফুল আর শস্য দানার ছবিকে হটিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে পরিণত হয়েছে এই সেলফি। এমনকি দেশের নিম্নয়ের যে মানুষটি দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন দামের কারণে পেট পুরে দুবেলা খেতে পারছে না ক্ষুধা মিটে যাচ্ছে এই সেলফি টার দিকে তাকানোর সাথে সাথে। এই সেলফির শক্তি জলোচ্ছ্বাসের থেকেও বেশি। যার তোরে খর কুটার মত ভেসে যাচ্ছে জনসমুদ্র। সবমিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ আর এই সেলফি যেন সমার্থক হয়ে গেছে।
কিছুদিন যাবৎ আমাদের দেশ সেলফি আর স্যাংশনের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। একদল সেলফি নিয়ে আনন্দে আত্মহারা আর একদল স্যাংশন নিয়ে। কিন্তু আমাদের এই সেলফি আর স্যাংশনের এর কাঠের চশমা খুলে খোলা মনে এবং খোলা চোখে দেশের দিকে তাকাতে হবে। টেনশন কোন দেশের ভাবমূর্তির জন্যই গর্বের বিষয় না। আবার স্যাংশন পেয়ে কেউ যদি নিজেদের না শুধরে পাল্টা স্যাংশনের কথা বলে এটাও কোন সমাধান না।
এখন সময় হয়েছে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ব্যক্তি স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে জনমত ও মানবাধিকার কে প্রাধান্য দেওয়া। দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর পেছনে যে সিন্ডিকেট কাজ করছে তাদের সাথে সেলফি তুলে দেশের মানুষকে দেখানোর সময় এখন। ব্যাংক খালি করার কুশীলবদের সাথে সেলফি তোলার সময় এখন। এমনকি মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে যে বিক্রেতা একটি ডাবের দাম ২০০ টাকা বানায় তার সাথেও একটি সেলফি হতে পারে। এদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট অর্থাৎ স্যাংশনের আওতায় আনতে হবে।
১৯৭১এর মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল মানুষের ভোট ভাতের অধিকার এবং মানবাধিকার। আমাদের সেই চেতনা মনেপ্রাণে এবং কর্মে লালন করতে হবে। সেটাই হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বাধীন গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ।
লেখক : এন/ডি